• 15 May, 2024

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। আজকের বাংলাদেশ যতদূর উন্নত-সমৃদ্ধ হয়েছে, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, এটা ধরে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের প্রত্যয়ী হতে হবে। গতকাল সকালে রাজধানীর বিজয় সরণিতে নবনির্মিত ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

এ প্রাঙ্গণের কেন্দ্রস্থলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত এই চত্বরের সাতটি দেয়ালে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে অন্যান্য আন্দোলন ও বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার নেতৃত্ব ও অবদান চিত্রিত হয়েছে। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ পরিদর্শন করেন এবং পরে সেখানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রী এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার এই ভাস্কর্যটি নিছক একটি ভাস্কর্য নয়, এটি একটি ইতিহাস। এটি আমাদের দেশকে জানার ইতিহাস। তিনি বলেন, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর স্বপ্ন ছিল প্রতিটি মানুষের ঘর থাকবে, চিকিৎসা ও শিক্ষা পাবে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নেই কাজ করছে আওয়ামী লীগ। ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে রূপান্তর করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সারা দেশে ওয়াই-ফাই সুবিধা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটসহ আধুনিক সব প্রযুক্তি স্থাপন করে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়েছে দেশের মানুষ। বর্তমানে দেশের ৯৮ ভাগ শিশু স্কুলে যেতে পারছে। বিনা পয়সায় বই পাচ্ছে, বৃত্তি পাচ্ছে। উপবৃত্তির টাকা দরিদ্র মায়েদের মোবাইলে পৌঁছে যাচ্ছে। এ সময় শিক্ষা অর্জনে শিক্ষার্থীদের মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, শিক্ষাই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, কোনো কিছুই সম্পদ নয়। সম্পদ হচ্ছে একমাত্র শিক্ষা। এটি কেউ কেড়েও নিতে পারবে না, ডাকাতিও করতে পারবে না। এটি নিজের কাছে থেকে যাবে। আর শিক্ষা থাকলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করা যাবে। তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে যখন মায়ের ভাষা বাংলা ভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তখন থেকে তিনি তাঁর প্রতিবাদ করেন এবং আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেখানে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার সংগ্রাম শুরু হয়। সেই সংগ্রামের পথ বেয়েই আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্কুল শিক্ষার্থীরা।
অগ্নিসন্ত্রাস-অবরোধে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি জানি না অগ্নিসন্ত্রাস থেকে কে কতটা লাভবান হয়। আন্দোলনের নামে আবার শুরু হওয়া অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ঘুমন্ত কর্মীকে গাড়ির ভিতরে রেখেও বাসে আগুন দেওয়া হয়। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার ত্রাণ তহবিলের জন্য বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান গ্রহণের সময় তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় আসন্ন শীত মৌসুমের আগেই তার ত্রাণ তহবিলের জন্য অনুদান দেওয়ার উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বৈদেশিক মুদ্রার ভালো রিজার্ভ বজায় রাখতে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি রোধ করতে এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার মতো পরিস্থিতির মধ্যে অর্থনীতিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে তিনি বিএবির সহযোগিতা কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একজন নারী হয়েও টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে দেশ পরিচালনা করছি। আমি সফলতার সঙ্গে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। আমি দেশকে আমূল বদলে দিয়েছি। সবাই এ সাফল্যকে ইতিবাচকভাবে দেখবে না। তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ ১৫ বছর আগে যা ছিল তার থেকে বদলে গেছে। এখন সবাই এ দেশকে সম্মান করে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত। কারণ বাংলাদেশের অগ্রগতি সবারই চোখে পড়ার মতো।