ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে যদি কোনো হামলা চালানো হয় তাহলে ইসরায়েলের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইরান।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার দায়িত্বে থাকা বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার আহমেদ হাগতালাব হুমকির সুরে বলেছেন, তাদের হাত ট্রিগারেই রয়েছে। যদি ইসরায়েল তাদের কোনো স্থাপনায় কোনো ধরনের হামলা চালায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা হামলা চালানো হবে। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামো কোথায় আছে সেটি তারা বেশ ভালোভাবে জানেন।
এই কমান্ডার আরও জানিয়েছেন, ইসরায়েল তাদের অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে যাওয়ায় তারা তাদের পারমাণবিক যে নীতি রয়েছে সেটি পরিবর্তন করার ব্যাপারেও ভাববেন।
ইরান বলে থাকে, তাদের যেসব পারমাণবিক কার্যক্রম রয়েছে তার সবই প্রয়োজনীয় এবং বেসামরিক। তবে পশ্চিমারা অভিযোগ করে থাকে, ইরান পারমাণবিক কার্যক্রমের আড়ালে পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ করছে।
ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলার হুমকি দিয়ে বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার আহমেদ হাগাতালেব আধাসরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজকে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বলেছেন, “আমাদের পারমাণবিক অবকাঠামোতে ইহুদিবাদীদের (ইসরায়েল) হামলার হুমকির বিষয়টি আমাদের পারমাণবিক নীতি নিয়ে নতুন করে ভাবার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।”
“যদি ইহুদিবাদীরা আমাদের পারমাণবিক কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়, আমরা নিশ্চিত এবং স্পষ্টভাবে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেব। এতে ব্যবহার করা হবে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র।”
তিনি আরও বলেছেন, “ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামো শনাক্ত করা হয়েছে এবং আমাদের হাত টিগ্রারেই রয়েছে।”
দখলদার ইসরায়েলের গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা জোহার পাল্টি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইরান যে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে সেটির বদলা নিতে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলার চিন্তা-ভাবনা করছে তারা। তার এমন বক্তব্যের পরই পাল্টা হুমকি দিয়েছে তেহরান।
ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করেন দেশটির প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ২০০০ সালে তিনি এক ডিক্রির মাধ্যমে পারমাণবিক বোমা তৈরি নিষিদ্ধ করেন। তবে ২০২১ সালে ইরানের তৎকালীন গোয়েন্দামন্ত্রী হুমকি দিয়েছিলেন, যে পশ্চিমাদের চাপে পড়ে ইরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে হবে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় সাত মাস ধরে চলা নির্বিচার এই হামলার জেরে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে।এরসঙ্গে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।