• 16 May, 2024

নড়াইল: বুদ্ধির জোরে পাচারকারীর হাত থেকে বেঁচে ফিরলেন তাসলিমা!

নড়াইল: বুদ্ধির জোরে পাচারকারীর হাত থেকে বেঁচে ফিরলেন তাসলিমা!

নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার ছোট কালিয়া গ্রামের হতদরিদ্র মো: অলিয়ার শেখের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তাসলিমা। পরিবারে মা বাবা তাসলিমাসহ ৪ বোন। তাসলিমা ব্যতিত পরিবারের অন্য সকলেই বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতার শিকার। কয়েকটি পুরাতন ভাঙ্গাচুরা টিনের জরাজির্ণ ঘরে করেন তারা।

সরাসরি তাসলিমার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার জীবনে অন্ধকার নেমে আসার ঘটনাটি নড়াইলকণ্ঠ প্রতিনিধির নিকট তুলেন ধরেন। 

তাসলিমা বলেন, ‘আমি কালিয়ার শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। আমরা খুবই গরীব পরিবার। পরিবারে আমি ছাড়া আর সকলেই মানসিকভারসাম্য। আমরা আমিসহ ৪ বোন , বাবা ও মা। দিনমজুরী করে বাবা সংসার চালায়। আমার জীবনে হঠাৎ করে প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ি পার্শ্ববর্তী খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার উত্তর চন্দন মহল (বোগদিয়) গ্রামের মাইনুল শেখের (২১) সাথে। এক পর্যায় আমাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। কিন্তু কাবিননামা হয় না। স্বামী মাইনুলের পরিবারের পক্ষ থেকে আপত্তি থাকায় আমাদের বিয়ে কাবিন বা রেজিষ্ট্রি হয় না।

এভাবে আমাদের বিবাহ জীবন চলতে থাকে বেশ কিছু দিন। শশুর বাড়ি থেকে যখন কালিয়ায় আমার বাবার বাড়িতে আসি এসএসসি পরীক্ষা দিতে। এ সময় আমি পরীক্ষার কারনে আমাকে একটানা বাবার বাড়িতে দুই মাসের মতো থাকতে হয়। এ সময় স্বামী মাইনুল আমার সাথে যাগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করেন। আমি নিজে চেষ্টা করি যোগাযোগ করার। একদিন আমি নিজেই শশুর বাড়িতে নিয়ে যেতে বললে স্বামী আমাকে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

তিনি আরও জানান, এক পর্যায় আমি পরীক্ষা শেষ করেই স্বামীর বাড়িতে ফিরে যায়। কিন্তু আমাকে স্বামী বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয় না। আমাকে দেখে না চেনার অভিনয় করে তারা। আমি তখন অসহায় হয়ে পড়ি। তকন ওই এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দারস্থ হই। কোনো মতে ওই রাতটি পার হওয়ার পর আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় আমার বাবার বাড়িতে। কালিয়াতে বাবার বাড়িতে এসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে মীমাংসা করার চেষ্টা করি। তাতেও অস্বীকৃতি জানায় আমার স্বামী মাইনুল (২১) ও তার পরিবার। শুধু অস্বীকৃতি জানিয়ে থেমে থাকেনি তারা। এরপর একেরপর এক বিভিন্ন প্রকার হুমকি-দামকি দিতে থাকে আমার পরিবারকে। আমার পরিবারের আমি ছাড়া সকলেই বাবা মা ও বোনরা মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মীমাংসার কথা বলে পাচার করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় ভারতে। তবে নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে আসি  কালিয়ায়। বাড়িতে এসে আইনের দারস্থ হই। কিন্তু আসামীরা প্রভাবশালি হওয়ায় বিচার নিয়ে সংশয় রয়েছি আমি এবং আমার পরিবার।

এ সময় তাসলিমা জানান, এরকম ভয়ংকর অভিজ্ঞতা যেন কোন মেয়ের সাথে না হয় তাই সে জন্য প্রশাসনের কাছে আসামির দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন তিনি।