• 17 May, 2024

নড়াইলে আইটি ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন ২৩ জুন : প্রধানমন্ত্রীকে মাশরাফীর ধন্যবাদ

নড়াইলে আইটি ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন ২৩ জুন : প্রধানমন্ত্রীকে মাশরাফীর ধন্যবাদ

আগামি ২৩ জুন শুক্রবার নড়াইলে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার (আইটি সেন্টার) প্রকল্পের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে যেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক বরেণ্য ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বিষয়টি মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেলে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এমপি  নামে ফেসবুক পেইজে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পোস্টটি করেন। 'নড়াইলকণ্ঠ' পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

প্রিয় নড়াইলবাসী,  
আসসালামু আলাইকুম।  
অত্যন্ত আনন্দ নিয়ে জানাচ্ছি যে, আগামী ২৩ জুন, শুক্রবার, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টারের কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন হতে যাচ্ছে। নড়াইলের তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই অন্তরের অন্তস্থল থেকে।

১৪টি জেলার প্রকল্পের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবার আগে বেছে নিয়েছেন নড়াইল জেলাকে। আমাদের জন্য এটা বড় প্রাপ্তির ও সম্মানের। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও উন্নয়নের দিশারী জননেত্রীর প্রতি নড়াইলবাসী চিরকৃতজ্ঞ থাকবে। ধন্যবাদ জানাই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে। আপনি সময়ের ডাক শুনতে পেয়েছিলেন এবং যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে ব্যবধান কমে আসছে। শুধু শহরেই নয়, গ্রাম থেকে গ্রামে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন প্রযুক্তির আলোয় ক্রমেই দূর হচ্ছে অজ্ঞতার আঁধার।

মাননীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নিজে উপস্থিত থেকে কাজের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। এই উদ্যোগের প্রথম ধাপ থেকেই তিনি দারুণ উৎসাহী ছিলেন, যা আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছে নিরন্তর। মন্ত্রী মহোদয়ের আন্তরিকতার ছোঁয়া খুব কাছ থেকেই অনুভব করেছি। আপনার প্রতি কোনো কৃতজ্ঞতা প্রকাশই যথেষ্ট নয়। আপনার ভালোবাসার পথ ধরে নড়াইলের তরুণ প্রজন্ম আরও এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ্।

আমি ধন্যবাদ জানাই সম্মানিত প্রকল্প পরিচালক মহোদয়, সচিব মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এই উদ্যোগকে বেগবান করেছে।

স্থানীয়ভাবে এই আইটি পার্ক নির্মাণের পথচলা খুব মসৃণ ছিল না আমাদের জন্য। বিশেষ করে, জমি নিয়ে অনেক জটিলতা ছিল। এমনকি, এই প্রকল্প নিয়ে মানববন্ধনও করা হয়েছিল। তখন যে পরিবারটি সবার আগে এগিয়ে এসেছিল মৃত: মো: মমিনুদ্দিন সরদার এবং তার ওয়ারিশ গন। তাদেরকে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। তাদের কাছে নড়াইলের তরুণ প্রজন্ম চিরঋণী থাকবে। সেই কঠিন সময়ে তারা আমাকে সহযোগিতা করেছিলেন। সেদিন তারা সহায়তার হাত বাড়িয়ে না দিলে আজকের এই আনন্দময় দিনটির দেখা পেতাম না আমরা।

আমরা স্বপ্ন দেখি, নড়াইলের তরুণ প্রজন্মের ভাগ্য বদলাতে বড় ভূমিকা রাখবে এই আইটি পার্ক। শিক্ষা, বাণিজ্যসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনা যেতে পারে, যদি আমরা এটিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি।

এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষ আইটি জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্ভব এই পার্কের মাধ্যমে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে উদ্যোক্তাদের সুবিধা প্রদান, একাডেমিয়া এবং আইটি শিল্পের মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ স্থাপন, স্টার্ট-আপগুলিকে সহায়তা প্রদান করা, আইটি/আইটিইএস সেক্টরে যুবকদের জন্য স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, এমন অনেক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে এই আইটি পার্ক দিয়ে।

বেকারত্ব যে কোনো পরিবারের জন্য অভিশাপ। ভবিষ্যতে এমন কার্যকর প্রকল্পগুলোই এই অভিশাপ থেকে অনেকটা মুক্ত করে তুলবে। একসময়ের পিছিয়ে থাকা জনপদ নড়াইল এভাবেই স্বপ্নময় নতুন দিনের পথে এগিয়ে যাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে।

উদ্বোধনী আয়োজনে আপনারা সবাই আমন্ত্রিত।  
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। 

গত ২০২২ সালে ২১ মে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা একইভাবে সকলের অবগতির জন্য জানিয়ে সেবসব কথা বলেছিলেন, আপনারা জানেন, ১ম ধাপেই এটি (আটি পার্ক)  পাস হওয়ার কথা ছিল। তবে জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেসময় সেটি অনুমোদন পায়নি। সেজন্য আমরা উচ্চ আদালতেও গিয়েছি। জমি সংক্রান্ত জটিলতার নিরসনও হয়েছে। এক্ষেত্রে আমি ওই জমির বাদী পক্ষ যারা ছিলেন, নড়াইলের বৃহত্তর স্বার্থে সেসময় তাদের সহযোগিতা পেয়েছি। তাদের প্রতি আজ আবারো আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।

চূড়ান্ত অনুমোদনের পর এখন খুব দ্রুত সময়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। নড়াইলের আইটি ট্রেনিং সেন্টারসহ ২য় ধাপে মোট ১৪ টি আইটি ট্রেনিং সেন্টার অনুমোদন পেয়েছে, যার সর্বমোট প্রকল্প ব্যয় ১১১৪.৬২৭৬ কোটি টাকা। নড়াইলের শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের জন্য নির্ধারিত স্থান নড়াইল-লোহাগড়া সড়কের পাশে সীমাখালী মৌজার মালিবাগ মোড়ে।

উল্লেখ্য, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার বাস্তবায়িত হলে নড়াইল জেলার ন্যূনতম এসএসসি /সমমান পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আইটি/আইটিইএস এ দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে, স্টার্ট আপদের সহায়তা প্রদান করা হবে এবং আইটি/আইটিইএস সেক্টরে যুবসমাজের আত্ন-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করবে ও আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলবে।