• 13 May, 2024

পিটিআইয়ের সাথে হাত মেলালো জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম

পিটিআইয়ের সাথে হাত মেলালো জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম

নির্বাচনের পর তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার অবসানে পাকিস্তানের কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দলের সাথে হাত মিলিয়েছে জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম পাকিস্তান (জেইউআই-পি)। সোমবার জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম পাকিস্তান পিটিআইয়ের সাথে হাত মেলানোর এই ঘোষণা দিয়েছে।

ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে জেইউআই-পির একজন নেতা বলেছেন, ‘‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জেইউআই-পির প্রতি আস্থা রাখায় এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে বেছে নেওয়ায় আমি পিটিআইয়ের কাছে ঋণী।’’

এদিকে, পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান গহর আলী খান বলেছেন, উভয় দলই যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবাই একমত যে, এই দেশ আমাদের, আমাদের দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। আমরা দেশের অর্থনীতির উন্নতির জন্য এক ধাপ এগিয়ে যাব।’’

গহর আলী খান বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে উভয় দল সম্মত হয়েছে।

অন্যদিকে, কেন্দ্র এবং প্রদেশগুলোতে জোট গঠনে ধর্ম-ভিত্তিক রাজনৈতিক দল সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিতে পৌঁছেছে পিটিআই। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ বলছে, দেশটির জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে পিটিআই-সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থীরা এসআইসিতে যোগদানের বিষয়ে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন কমিশনে (ইসিপি) তাদের হলফনামা জমা দিতে শুরু করেছেন।

দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পিটিআই-সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সাথে তাদের অন্তর্ভুক্তি ঘোষণা করছে। 

• স্বতন্ত্রদের গুমের অভিযোগ

পিটিআই-সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থীদের একের পর এক তুলে নিয়ে গিয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী গুম করছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। পিটিআইয়ের কোর কমিটি নতুন করে স্বতন্ত্রদের গুমের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে দল ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে পিটিআই।

বানি গালায় ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির জীবন ‘‘গুরুতর হুমকির’’ মুখে আছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে পিটিআই বলেছে, ইমরান খানের বানি গালার বাসভবনে সাবেক ফার্স্ট লেডি বুশরা বিবিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে ‘‘বিষাক্ত খাবার’’ দেওয়া হয়েছিল।

গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু দলটির নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করতে পারছে না। যে কারণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয় পাওয়া পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) কেন্দ্রে জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে পিপিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সাথে জোট গড়ার চেষ্টা করছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও দলই সরকার গঠনের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়নি।

নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৯টি ও বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৩টি আসনে জয় পেয়েছে। দেশটিতে কোনও দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ব্যাপক রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।